ভাইরাসঃ
ভাইরাস একটি ক্ষতিকারক কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার ভাইরাস বাইরের উৎস থেকে কম্পিউটারের মেমোরিতে প্রবেশ করে এবং গোপনে বিস্তার লাভ করে মূল্যবান প্রোগ্রাম, তথ্য নষ্ট করা ছাড়াও অনেক সময় কম্পিউটারকে অচল করে দেয়। কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন একটি প্রোগ্রাম যা একটি ধ্বংসকারী হিসেবে নিজেকে (অথার্ৎ এর “এক্সিকিউটেবল” অংশকে) অন্যান্য প্রোগ্রামের সাথে সেঁটে দিয়ে নিজের অসংখ্য প্রতিরুপ (ডুপলিকেট) তৈরির মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটায় এবং পর্যায়ক্রমে এর ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তৃতির নিশ্চয়তা বিধান করে। প্রকারান-রে এ সংক্রমিত প্রোগ্রামগুলো ভাইরাসের হয়ে অন্যান্য সুস’ প্রোগ্রামগুলোতে সংক্রমণ ঘটায়।
কম্পিউটারের পরিভাষায় ভাইরাস (Virus) শব্দটিকে ভাঙলে পাওয়া যায় ’’ভাইটাল ইনফরমেশন রিসোর্সস আন্ডার সিজ’’ বা Vital Information Resources Under Seize = VIRUS. অথ্যার্ৎ গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রখ্যাত গবেষক প্রেড কোহেন ভাইরাস এর নামকরণ করেন। আবার অনেকেই VIRUS কে Very Important Resource under Seize নামেও অভিহিত করে থাকেন।
সত্তরের দশকে আরপানেট – (Arpanet) এ “ক্রিপার ভাইরাস” নামে একটি ভাইরাসকে প্রথম চিহ্নিত করা হয়। ১৯৭১ সালে বিবিএন – এ কর্মরত বব থমাস পরীক্ষামূলকভাবে নিজে নিজে প্রতিরুপ সৃষ্টিকারী এই প্রোগ্রামটি লিখেন। Tennex অপারেটিং সিষ্টেমে চালিত DEC PDP-১০ কম্পিউটারসমূহকে আক্রান- করার উদ্দেশ্যে ক্রিপার ভাইরাসটিকে আরপানেচে ছেড়ে দেয়া হয়। ভাইরাসটি সাফল্যের সাথে আরপানেটে এ্যাকসেসের সুযোগ পায় এবং আক্রান- সিস্টেমগুলোতে “I’m the creeper, catch me if you can!” মেসেজটি প্রদর্শন করে। ক্রিপারকে মুছে দেবার জন্য পরে অবশ্য আরেকটি প্রোগ্রাম লিখা হয়।
১৯৯৯ সালে ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার সিআইএইচ বা চেনোবিল নামক ভাইরাসের আক্রমেণ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। টাইম বোমায় ন্যায় নির্দিষ্ট সময়ে এ ভাইরাসটি কম্পিউটারকে আক্রান- করে। একই সময়ে সারাবিশ্বে ভাইরাস দ্বারা আক্রান- হওয়ার এটিই সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা।
ভাইরাসের শ্রেণীবিভাগ করা খুবই কঠিন। কারণ প্রায় প্রতিদিনই কিছু অসাধূ প্রোগ্রামারদের দ্বারা নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে। তারপর ও আমি ভাইরাস কে ১৫টি শ্রেণীবিভাগ করতে পেরেছিঃ
১। ট্রোজান হর্স ভাইরাস
২। প্রোগ্রাম ভাইরাস
৩। কমান্ড পারপাস ভাইরাস
৪। জেনারেল পারপাস ভাইরাস
৫। ম্যাক্রো ভাইরাস
৬। কমপেনিয়ন ভাইরাস
৭। ওভার রাইটিং ভাইরাস
৮। মাল্টিপারশিয়েট ভাইরাস
৯। ফাইল ভাইরাস
১০। বুট সেক্টর ভাইরাস
১১। পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস
১২। মেমোরি রেসিডেন্ট ভাইরাস
১৩। স্টিলথ ভাইরাস
১৪। ফ্ল্যাশ ভাইরাস
১৫। কাস্টম ভাইরাস (দুনিয়ায় যত নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে)
ম্যাক্রো ভাইরাসঃ এটি একটি সাধারণ শ্রেণীর ভাইরাস যা ডাটা ফাইলকে আক্রমণ করে। এই ভাইরাস তৈরি করা খুবই সহজ। এই ভাইরাস মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ফাইল সমূহে আক্রমণ করে বেশি। বর্তমান সময়ে এই ধরণের ভাইরাস প্রায়ই দেখা যায়। এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান- ওর্য়াড ফাইলটি চালু করলে কিছু আজেবাজে লেখা দেখা যায় মূল ফাইলের সংরক্ষিত লেখা সমূহের বদলে।
বুট সেক্টর ভাইরাসঃ এটির নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে এটি কি ধরণের ভাইরাস এবং এটির কাজ কি। এক জাতীয় ভাইরাস সরসরী কম্পিউটারের বুট সেক্টর নিজেদের কোড দ্বারা পরিবর্তন করে এবং অপারেটিং সিষ্টেমের একটি অংশ হয়ে যায়!। এগুলো মেমোরীতে নিজেদের স’াপন করে। এরপর বুট সেক্টরকে ডিস্কের অন্য স’ানে সরিয়ে রেখে নিজের কোড দিয়ে বুট সেক্টরকে প্রতিস’াপন করে। এ জাতীয় ভাইরাস কম্পিউটারের বুটিং সিস্টেম ধ্বংস করে দেয়।
ফাইল ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি অতি “জনপ্রিয়!”। মানে প্রায় সব পিসিতে এই ভাইরাস প্রায়ই দেখা যায়। এই ভাইরাস এক্সিকিউটেবল প্রোগ্রাম ফাইলসমুহকে আক্রমণ এবং এক্সটেনশন যুক্ত ফাইলসমুহকে আক্রান- করে । আক্রান- প্রোগ্রাম রান করলে প্রথমে ভাইরাস রান করে অরিজিনাল প্রোগ্রামের নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরে প্রতিলিপি তৈরি করার জন্য এর কোডকে অন্য ফাইল এ কপি করে।
প্রোগ্রাম ভাইরাসঃ এইসব ভাইরাস তাদের ভাইরাস কোড এক্সিকিউটেবল ফাইলের প্রথমে বা শেষে যুক্ত করে এবং মূল প্রোগ্রামের কোন বিশেষ অংশকে নিজস্ব কোড দ্বারা প্রতিস’াপিত করে।
ওভার রাইটিং ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি আক্রান- ফাইলগুলোকে তার নিজস্ব কোড দ্বারা ওভার রাইট করে এতে ওই প্রোগ্রামের আর কোন কাজ থাকে না । মানে আক্রান- প্রোগ্রামটি নষ্ট হয়ে যায়।
কম্প্যানিয়ন ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি কম্পিউটারের .exe এক্সটানশান যুক্ত ফাইলকে .com এক্সটানশান এ রুপান-র করে ফাইলটি কে নষ্ট করে ফেলে।
ট্রোজান হর্স ভাইরাসঃ গ্রীক এর পুরান ট্রোজান ঘোড়ার নামানুসারে এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয়। এটি আসলে খুবই মারাক্তক ভাইরাস যদিও উপকারের মত ভান করে । এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান- কোন প্রোগ্রাম চালু করলে কম্পিউটারে ডিস্ক বা ফাইল নষ্ট হতে পারে। এই ভাইরাস প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আক্রান- পিসিকে একটি ফলাফলের দিকে ধাবিত করা। যেমন : হঠাৎ কোনো ফাইল বা ডিক্টেরী ডিলেট হয়ে যায়। আবার কখনও সমস- হার্ডডিস্ক নিজে নিজে ফরমেট হয়ে যায়। ট্রোজান হর্স ভাইরাস বর্তমানে যেকোন গেমের ট্রেইনার ফাইল সমুহে বেশি দেখা যাচ্ছে।
পার্টিশন সেক্টর ভাইরাসঃ এই ভাইরাস এর কাজ হল আক্রান- পিসির পার্টিশন গুলো ভেঙ্গে দেওয়া । মনে করুন আপনার পিসিতে অডিও এবং ভিডিও নামের দুটি পার্টিশন আছে। এখন আপনার পিসিতে যদি পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস আক্রমণ করে তবে সেই অডিও এবং ভিডিও পার্টিশনগুলো ভেঙে একটি পার্টিশনে রুপ নেবে।
কম্পিউটারে ভাইরাস সাধারণ বাইরের এক্সটারনাল ডিস্ক ব্যবহারের কারণে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়ায়। তাছাড়াও আরো অনেক উৎস আছে। যেমনঃ
১। বাইরের হার্ডডিস্ক, সিডি, ডিভিডি, ফ্ল্যাশ ডিক্স, পেনড্রাইভ বা অন্য কোন ডিস্কের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ডাটা আদান-প্রদানের সময়।
২। ইন্টারনেট ও ই-মেইল এর অসতর্কাতায়।
৩। নেটওয়ার্ক সিস্টেমের এক কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারের অথবা সার্ভারের প্রোগ্রাম / ডাটা আদান-প্রদান এর মাধ্যমে।
৪। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে।
অন্যান্য রোগ বালাইয়ের মতো পিসিতে ভাইরাস সংক্রমণেরও নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ রয়েছে। পিসির সাথে ঘনিষ্ট একজন ব্যবহারকারী অনুভব করতে পারে কখন পিসিটি সুস’ভাবে কাজ করছে না। সাধারণ একটি ভাইরাস আক্রান- পিসিতে যেসব লক্ষণ অনুভব করা যায় তা হলঃ
১। কম্পিউটার চালু হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নেওয়া।
২। exe ফাইলের আকার অনেক বেড়ে যাওয়া।
৩। হঠাৎ করে ফাইল উধাও হয়ে যাওয়া অথবা নাম পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।
৪। ড্রাইভের নাম পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।
৫। ফাইলের কিছু অংশে অবাঞ্চিত চিহ্ন বা বার্তা দেখা।
৬। পর্দায় অদ্ভুত বা হাস্যকর বার্তা বা চিত্র পরিলক্ষিত হওয়া।
৭। অস্বাভাবিক এরর সংকেত প্রদর্শিত হওয়া।
৮। পর্দায় অপ্রত্যাশিত শব্দ শোনা বা ছবি দেখতে পাওয়া।
৯। সিস্টেমের সময় ও তারিখ পরিবর্তিত হওয়া।
১০। ডিস্কে ব্যাড সেক্টর বেড়ে যাওয়া। কারণ কিছু কিছু ভাইরাস নিজেদেরকে লুকানোর জন্য তাদের অবস’ানকে ব্যাড সেক্টর হিসেবে মার্ক করে দেয় যাতে অপারেটিং সিষ্টেম অথবা অন্য কোন প্রোগ্রাম সেখানে ঢুকতে না পারে।
১১। সাধারণ কাজেও ডিস্ক একসিস সময় বেড়ে যাওয়া। (যেমন কোন ফাইল কপি-পেষ্ট করতে সময় বেশি লাগা)
১২। ফাইল সেভ এবং প্রিন্ট করতে অনেক সময় নেওয়া
১৩। মেমোরির সাইজ কমিয়ে কোন প্রোগ্রাম চালনা ব্যাহত করা। যেমনঃ Out of Memory / Insufficient Memory বার্তা প্রদর্শিত হওয়া।
১৪। কম্পিউটার এর কার্যকম ক্রমশ ধীর / স্লো হয়ে যাওয়া।
১৫। প্রোগ্রামের বিভিন্ন মেনু, অপশন, লিস্ট ইত্যাদি অংশগুলো স্বাভাবিক অবস’ার মতো আর খুঁজে না পাওয়া।
১৬। কাজের মাঝখানে হঠাৎ করে কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যাওয়া বা রিষ্টার্ট নেওয়া।
১৭। কম্পিউটারে সংরক্ষিত বিভিন্ন ফোল্ডারের নামে উক্ত ফোল্ডারের মধ্যে ফোল্ডারের নাম সহ শেষে একটি .বীব এক্সটেশনযুক্ত ফোল্ডার পাওয়া।
১৮। ইমেজ ফাইলসমূহের সাইজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একেবারে কমে গিয়ে কয়েক কিলোবাইটে এসে ঠেকা এবং ফলশ্রুতিতে ফাইলটি আর ওপেন না হওয়া।
এছাড়াও আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে ভাইরাস আক্রান্ত পিসির।
কম্পিউটারে ভাইরাসদের যেসব জায়গায় টার্গেট থাকে সেগুলো হলঃ
১। কম্পিউটারের বুট সেক্টরে,
২। ফ্যাট বা ফাইল অ্যালোকেশন টেবলে
৩। হার্ডডিস্ক এবং ফ্ল্যাশ ডিস্ক এ
৪। ডুকুমেন্ট ফাইলে
৫। ইমেজ ফাইলে
৬।.exe ফাইলসমূহে।
এন্টিভাইরাসঃ
ভাইরাসসমূহ নিমূর্লে ব্যবহৃত প্রোগ্রামসমূহকে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম বলে। প্রতিদিন সারা বিশ্বের বিভিন্ন Place থেকে অসংখ্য নতুন নতুন ভাইরাস সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ভাইরাসের উপর গবেষণা করে এর প্রতিষেধক অর্থাৎ এন্টিভাইরাসও তৈরি হচ্ছে। ভাইরাসে সাথে তাল মিলিয়ে এন্টিভাইরাস তৈরি করা অনেক সময়, মেধা ও অর্থের প্রয়োজন। তাই বৃহৎ কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া আপডেটেড এন্টিভাইরাস তৈরি করা অসম্ভব।
বর্তমান বিশ্বে জনপ্রিয় এন্টিভাইরাস গুলো হলঃ
1. Avast Antivirus & Internet Security
2. Kaspersky Antivirus & Internet Security
3. AVG Antivirus & Internet Security
4. Norton Antivirus , Internet Security, 360.
5. Avira Antivirus
6. McAffy’s Virus Scan
এছাড়াও আরো অনেক এন্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলো তেমন জনপ্রিয় হয় নি।
ভাইরাস নির্মুল এবং প্রতিরোধের উপায়ঃ
১। একান- প্রয়োজন না হলে বাইরের কোন ডিস্ক ব্যবহার না করা। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরের ডিস্ক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই আপডেটেড কোন এন্টিভাইরাসের স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে নেয়া। ভাইরাস পেলে তা রিমুভ, কিল, হিল বা ডিলেট করে নেয়া।
২। সিডি বা ডিভিডি ব্যবহারের পূর্বে এন্টিভাইরাসের স্ক্যানেরর মাধ্যামে স্ক্যানের পর তাতে ভাইরাস ধরা পড়লে ওই সিডি/ডিভিডি ব্যবহার না করা। কারণ সিডি/ডিভিডিতে রাইট করা অবস’ায় ভাইরাস পাওয়া গেলেও তা মুছা অসম্ভব।
৩। আজকাল মোবাইল ফোনে মেমোরি স্টিক জাতীয় এক্সাটার্নাল মেমোরি যুক্ত করার সুবিধা থাকায় এবং গান, রিংটোন, ইমেজ বা মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টসমূহ কম্পিউটার হতে মোবাইল ফোনে ডাউনলোড এবং মোবাইল ফোন হতে কম্পিউটারে আপলোড করার বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হওয়ায় এসব ক্ষেত্রে কম্পিউটারের সাথে মোবাইলে সংযোগ দেওয়ার সাথে সাথে সেটিকে স্ক্যান করে নেওয়া উচিত।
৪। ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ছবি পিসিতে আপলোড করার সময় ক্যামেরার মেমোরিকে স্ক্যান করিয়ে নেওয়া।
৫। ডিস্ক রাইট প্রটেক্ট না করে অন্য কোন কম্পিউটারে ব্যবহার না করা।
৬। সব সময় এন্টিভাইরাসের আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করা।
৭। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে অবশ্যই প্রতিদিন এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামটি আপডেড করিয়ে নেওয়া।
৮। প্রতিদিন কাজের শেষে প্রয়োজনীয় ডাটার ব্যাকআপ রাখা। ব্যাকআপ রাখার পূর্বে যে স’ানে ব্যাকআপটি নেয়া হচ্ছে সেটি ভাইরাসমুক্ত কিনা তা দেখে নেওয়া।
৯। পিসিতে কোন পেনড্রাইভ / সিডি-ডিভিডি রেখে কম্পিউটার চালু না করা।
১০। অধিকাংশ ভাইরাস সাধারণ .exe ফাইলসমুহে আক্রমণ করে বেশি। তাই .exe ফাইলসমুহ Read Only করে রাখা।
১১। মাঝে মাঝে এন্টিভাইরাস দিয়ে পুরো পিসিকে স্ক্যান করিয়ে নেওয়া।
১২। ইন্টারনেট এবং ল্যান ব্যবহারে সতর্ক হওয়া। ইন্টারনেট এবং ল্যান ব্যবহারের পূর্বে এন্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল চালু রাখা।
১৩। ভাইরাস স্ক্যানিং করে ইন্টারনেট থেকে ফাইল ডাউনলোড করা।
১৪। ই-মেইল এ অপরিচিত এটাচমেন্ট ফাইল খোলার ব্যাপারে সর্তক হওয়া।
১৫। ওয়েবে ”টরেন্ট” জাতীয় সাইট হতে ফাইল নামানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা। এ ধরণের সাইটে নানা ধরণের ভাইরাস লুকিয়ে থাকতে পারে।
১৬। অযথা অপ্রয়োজনীয় ফ্রি সফটওয়্যার বা ডেমো সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।
১৭। কম্পিউটার র্স্টাটআপে ভাইরাস প্রতিরক্ষক গার্ড একটিভ রাখা।
১৮। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা। কারণ এজাতীয় সফটওয়্যারগুলোকে একটিভ করার জন্য এদের সাথে কী-জেন জাতীয় প্রোগ্রাম দিয়ে দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে ভাইরাস থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
১৯। সম্ভব হলে বছরে অন-ত একবার সম্পূর্ণ হার্ডডিস্ট টি ফরম্যাট করে নতুন করে সব প্রোগ্রাম ইন্সটল করা।
২০। পিসিতে অতিরিক্ত গেমস ইনষ্টল না করা।
উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে ভাইরাস হতে নিজের পিসিকে অনেকটায় বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
কৃতজ্ঞতাঃ ফাহাদ
ভাইরাস একটি ক্ষতিকারক কম্পিউটার প্রোগ্রাম। কম্পিউটার ভাইরাস বাইরের উৎস থেকে কম্পিউটারের মেমোরিতে প্রবেশ করে এবং গোপনে বিস্তার লাভ করে মূল্যবান প্রোগ্রাম, তথ্য নষ্ট করা ছাড়াও অনেক সময় কম্পিউটারকে অচল করে দেয়। কম্পিউটার ভাইরাস হলো এমন একটি প্রোগ্রাম যা একটি ধ্বংসকারী হিসেবে নিজেকে (অথার্ৎ এর “এক্সিকিউটেবল” অংশকে) অন্যান্য প্রোগ্রামের সাথে সেঁটে দিয়ে নিজের অসংখ্য প্রতিরুপ (ডুপলিকেট) তৈরির মাধ্যমে সংক্রমণ ঘটায় এবং পর্যায়ক্রমে এর ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তৃতির নিশ্চয়তা বিধান করে। প্রকারান-রে এ সংক্রমিত প্রোগ্রামগুলো ভাইরাসের হয়ে অন্যান্য সুস’ প্রোগ্রামগুলোতে সংক্রমণ ঘটায়।
কম্পিউটারের পরিভাষায় ভাইরাস (Virus) শব্দটিকে ভাঙলে পাওয়া যায় ’’ভাইটাল ইনফরমেশন রিসোর্সস আন্ডার সিজ’’ বা Vital Information Resources Under Seize = VIRUS. অথ্যার্ৎ গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রখ্যাত গবেষক প্রেড কোহেন ভাইরাস এর নামকরণ করেন। আবার অনেকেই VIRUS কে Very Important Resource under Seize নামেও অভিহিত করে থাকেন।
সত্তরের দশকে আরপানেট – (Arpanet) এ “ক্রিপার ভাইরাস” নামে একটি ভাইরাসকে প্রথম চিহ্নিত করা হয়। ১৯৭১ সালে বিবিএন – এ কর্মরত বব থমাস পরীক্ষামূলকভাবে নিজে নিজে প্রতিরুপ সৃষ্টিকারী এই প্রোগ্রামটি লিখেন। Tennex অপারেটিং সিষ্টেমে চালিত DEC PDP-১০ কম্পিউটারসমূহকে আক্রান- করার উদ্দেশ্যে ক্রিপার ভাইরাসটিকে আরপানেচে ছেড়ে দেয়া হয়। ভাইরাসটি সাফল্যের সাথে আরপানেটে এ্যাকসেসের সুযোগ পায় এবং আক্রান- সিস্টেমগুলোতে “I’m the creeper, catch me if you can!” মেসেজটি প্রদর্শন করে। ক্রিপারকে মুছে দেবার জন্য পরে অবশ্য আরেকটি প্রোগ্রাম লিখা হয়।
১৯৯৯ সালে ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ কম্পিউটার সিআইএইচ বা চেনোবিল নামক ভাইরাসের আক্রমেণ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। টাইম বোমায় ন্যায় নির্দিষ্ট সময়ে এ ভাইরাসটি কম্পিউটারকে আক্রান- করে। একই সময়ে সারাবিশ্বে ভাইরাস দ্বারা আক্রান- হওয়ার এটিই সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা।
ভাইরাসের শ্রেণীবিভাগ করা খুবই কঠিন। কারণ প্রায় প্রতিদিনই কিছু অসাধূ প্রোগ্রামারদের দ্বারা নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে। তারপর ও আমি ভাইরাস কে ১৫টি শ্রেণীবিভাগ করতে পেরেছিঃ
১। ট্রোজান হর্স ভাইরাস
২। প্রোগ্রাম ভাইরাস
৩। কমান্ড পারপাস ভাইরাস
৪। জেনারেল পারপাস ভাইরাস
৫। ম্যাক্রো ভাইরাস
৬। কমপেনিয়ন ভাইরাস
৭। ওভার রাইটিং ভাইরাস
৮। মাল্টিপারশিয়েট ভাইরাস
৯। ফাইল ভাইরাস
১০। বুট সেক্টর ভাইরাস
১১। পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস
১২। মেমোরি রেসিডেন্ট ভাইরাস
১৩। স্টিলথ ভাইরাস
১৪। ফ্ল্যাশ ভাইরাস
১৫। কাস্টম ভাইরাস (দুনিয়ায় যত নতুন নতুন ভাইরাস তৈরি হচ্ছে)
ম্যাক্রো ভাইরাসঃ এটি একটি সাধারণ শ্রেণীর ভাইরাস যা ডাটা ফাইলকে আক্রমণ করে। এই ভাইরাস তৈরি করা খুবই সহজ। এই ভাইরাস মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের ফাইল সমূহে আক্রমণ করে বেশি। বর্তমান সময়ে এই ধরণের ভাইরাস প্রায়ই দেখা যায়। এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান- ওর্য়াড ফাইলটি চালু করলে কিছু আজেবাজে লেখা দেখা যায় মূল ফাইলের সংরক্ষিত লেখা সমূহের বদলে।
বুট সেক্টর ভাইরাসঃ এটির নাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে এটি কি ধরণের ভাইরাস এবং এটির কাজ কি। এক জাতীয় ভাইরাস সরসরী কম্পিউটারের বুট সেক্টর নিজেদের কোড দ্বারা পরিবর্তন করে এবং অপারেটিং সিষ্টেমের একটি অংশ হয়ে যায়!। এগুলো মেমোরীতে নিজেদের স’াপন করে। এরপর বুট সেক্টরকে ডিস্কের অন্য স’ানে সরিয়ে রেখে নিজের কোড দিয়ে বুট সেক্টরকে প্রতিস’াপন করে। এ জাতীয় ভাইরাস কম্পিউটারের বুটিং সিস্টেম ধ্বংস করে দেয়।
ফাইল ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি অতি “জনপ্রিয়!”। মানে প্রায় সব পিসিতে এই ভাইরাস প্রায়ই দেখা যায়। এই ভাইরাস এক্সিকিউটেবল প্রোগ্রাম ফাইলসমুহকে আক্রমণ এবং এক্সটেনশন যুক্ত ফাইলসমুহকে আক্রান- করে । আক্রান- প্রোগ্রাম রান করলে প্রথমে ভাইরাস রান করে অরিজিনাল প্রোগ্রামের নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরে প্রতিলিপি তৈরি করার জন্য এর কোডকে অন্য ফাইল এ কপি করে।
প্রোগ্রাম ভাইরাসঃ এইসব ভাইরাস তাদের ভাইরাস কোড এক্সিকিউটেবল ফাইলের প্রথমে বা শেষে যুক্ত করে এবং মূল প্রোগ্রামের কোন বিশেষ অংশকে নিজস্ব কোড দ্বারা প্রতিস’াপিত করে।
ওভার রাইটিং ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি আক্রান- ফাইলগুলোকে তার নিজস্ব কোড দ্বারা ওভার রাইট করে এতে ওই প্রোগ্রামের আর কোন কাজ থাকে না । মানে আক্রান- প্রোগ্রামটি নষ্ট হয়ে যায়।
কম্প্যানিয়ন ভাইরাসঃ এই ভাইরাসটি কম্পিউটারের .exe এক্সটানশান যুক্ত ফাইলকে .com এক্সটানশান এ রুপান-র করে ফাইলটি কে নষ্ট করে ফেলে।
ট্রোজান হর্স ভাইরাসঃ গ্রীক এর পুরান ট্রোজান ঘোড়ার নামানুসারে এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয়। এটি আসলে খুবই মারাক্তক ভাইরাস যদিও উপকারের মত ভান করে । এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান- কোন প্রোগ্রাম চালু করলে কম্পিউটারে ডিস্ক বা ফাইল নষ্ট হতে পারে। এই ভাইরাস প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আক্রান- পিসিকে একটি ফলাফলের দিকে ধাবিত করা। যেমন : হঠাৎ কোনো ফাইল বা ডিক্টেরী ডিলেট হয়ে যায়। আবার কখনও সমস- হার্ডডিস্ক নিজে নিজে ফরমেট হয়ে যায়। ট্রোজান হর্স ভাইরাস বর্তমানে যেকোন গেমের ট্রেইনার ফাইল সমুহে বেশি দেখা যাচ্ছে।
পার্টিশন সেক্টর ভাইরাসঃ এই ভাইরাস এর কাজ হল আক্রান- পিসির পার্টিশন গুলো ভেঙ্গে দেওয়া । মনে করুন আপনার পিসিতে অডিও এবং ভিডিও নামের দুটি পার্টিশন আছে। এখন আপনার পিসিতে যদি পার্টিশন সেক্টর ভাইরাস আক্রমণ করে তবে সেই অডিও এবং ভিডিও পার্টিশনগুলো ভেঙে একটি পার্টিশনে রুপ নেবে।
কম্পিউটারে ভাইরাস সাধারণ বাইরের এক্সটারনাল ডিস্ক ব্যবহারের কারণে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়ায়। তাছাড়াও আরো অনেক উৎস আছে। যেমনঃ
১। বাইরের হার্ডডিস্ক, সিডি, ডিভিডি, ফ্ল্যাশ ডিক্স, পেনড্রাইভ বা অন্য কোন ডিস্কের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ডাটা আদান-প্রদানের সময়।
২। ইন্টারনেট ও ই-মেইল এর অসতর্কাতায়।
৩। নেটওয়ার্ক সিস্টেমের এক কম্পিউটারের সাথে অন্য কম্পিউটারের অথবা সার্ভারের প্রোগ্রাম / ডাটা আদান-প্রদান এর মাধ্যমে।
৪। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে।
অন্যান্য রোগ বালাইয়ের মতো পিসিতে ভাইরাস সংক্রমণেরও নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ রয়েছে। পিসির সাথে ঘনিষ্ট একজন ব্যবহারকারী অনুভব করতে পারে কখন পিসিটি সুস’ভাবে কাজ করছে না। সাধারণ একটি ভাইরাস আক্রান- পিসিতে যেসব লক্ষণ অনুভব করা যায় তা হলঃ
১। কম্পিউটার চালু হতে আগের চেয়ে বেশি সময় নেওয়া।
২। exe ফাইলের আকার অনেক বেড়ে যাওয়া।
৩। হঠাৎ করে ফাইল উধাও হয়ে যাওয়া অথবা নাম পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।
৪। ড্রাইভের নাম পরিবর্তিত হয়ে যাওয়া।
৫। ফাইলের কিছু অংশে অবাঞ্চিত চিহ্ন বা বার্তা দেখা।
৬। পর্দায় অদ্ভুত বা হাস্যকর বার্তা বা চিত্র পরিলক্ষিত হওয়া।
৭। অস্বাভাবিক এরর সংকেত প্রদর্শিত হওয়া।
৮। পর্দায় অপ্রত্যাশিত শব্দ শোনা বা ছবি দেখতে পাওয়া।
৯। সিস্টেমের সময় ও তারিখ পরিবর্তিত হওয়া।
১০। ডিস্কে ব্যাড সেক্টর বেড়ে যাওয়া। কারণ কিছু কিছু ভাইরাস নিজেদেরকে লুকানোর জন্য তাদের অবস’ানকে ব্যাড সেক্টর হিসেবে মার্ক করে দেয় যাতে অপারেটিং সিষ্টেম অথবা অন্য কোন প্রোগ্রাম সেখানে ঢুকতে না পারে।
১১। সাধারণ কাজেও ডিস্ক একসিস সময় বেড়ে যাওয়া। (যেমন কোন ফাইল কপি-পেষ্ট করতে সময় বেশি লাগা)
১২। ফাইল সেভ এবং প্রিন্ট করতে অনেক সময় নেওয়া
১৩। মেমোরির সাইজ কমিয়ে কোন প্রোগ্রাম চালনা ব্যাহত করা। যেমনঃ Out of Memory / Insufficient Memory বার্তা প্রদর্শিত হওয়া।
১৪। কম্পিউটার এর কার্যকম ক্রমশ ধীর / স্লো হয়ে যাওয়া।
১৫। প্রোগ্রামের বিভিন্ন মেনু, অপশন, লিস্ট ইত্যাদি অংশগুলো স্বাভাবিক অবস’ার মতো আর খুঁজে না পাওয়া।
১৬। কাজের মাঝখানে হঠাৎ করে কম্পিউটার হ্যাং হয়ে যাওয়া বা রিষ্টার্ট নেওয়া।
১৭। কম্পিউটারে সংরক্ষিত বিভিন্ন ফোল্ডারের নামে উক্ত ফোল্ডারের মধ্যে ফোল্ডারের নাম সহ শেষে একটি .বীব এক্সটেশনযুক্ত ফোল্ডার পাওয়া।
১৮। ইমেজ ফাইলসমূহের সাইজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে একেবারে কমে গিয়ে কয়েক কিলোবাইটে এসে ঠেকা এবং ফলশ্রুতিতে ফাইলটি আর ওপেন না হওয়া।
এছাড়াও আরো অনেক লক্ষণ রয়েছে ভাইরাস আক্রান্ত পিসির।
কম্পিউটারে ভাইরাসদের যেসব জায়গায় টার্গেট থাকে সেগুলো হলঃ
১। কম্পিউটারের বুট সেক্টরে,
২। ফ্যাট বা ফাইল অ্যালোকেশন টেবলে
৩। হার্ডডিস্ক এবং ফ্ল্যাশ ডিস্ক এ
৪। ডুকুমেন্ট ফাইলে
৫। ইমেজ ফাইলে
৬।.exe ফাইলসমূহে।
এন্টিভাইরাসঃ
ভাইরাসসমূহ নিমূর্লে ব্যবহৃত প্রোগ্রামসমূহকে এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম বলে। প্রতিদিন সারা বিশ্বের বিভিন্ন Place থেকে অসংখ্য নতুন নতুন ভাইরাস সৃষ্টি হচ্ছে। এসব ভাইরাসের উপর গবেষণা করে এর প্রতিষেধক অর্থাৎ এন্টিভাইরাসও তৈরি হচ্ছে। ভাইরাসে সাথে তাল মিলিয়ে এন্টিভাইরাস তৈরি করা অনেক সময়, মেধা ও অর্থের প্রয়োজন। তাই বৃহৎ কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ছাড়া আপডেটেড এন্টিভাইরাস তৈরি করা অসম্ভব।
বর্তমান বিশ্বে জনপ্রিয় এন্টিভাইরাস গুলো হলঃ
1. Avast Antivirus & Internet Security
2. Kaspersky Antivirus & Internet Security
3. AVG Antivirus & Internet Security
4. Norton Antivirus , Internet Security, 360.
5. Avira Antivirus
6. McAffy’s Virus Scan
এছাড়াও আরো অনেক এন্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলো তেমন জনপ্রিয় হয় নি।
ভাইরাস নির্মুল এবং প্রতিরোধের উপায়ঃ
১। একান- প্রয়োজন না হলে বাইরের কোন ডিস্ক ব্যবহার না করা। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরের ডিস্ক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই আপডেটেড কোন এন্টিভাইরাসের স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে নেয়া। ভাইরাস পেলে তা রিমুভ, কিল, হিল বা ডিলেট করে নেয়া।
২। সিডি বা ডিভিডি ব্যবহারের পূর্বে এন্টিভাইরাসের স্ক্যানেরর মাধ্যামে স্ক্যানের পর তাতে ভাইরাস ধরা পড়লে ওই সিডি/ডিভিডি ব্যবহার না করা। কারণ সিডি/ডিভিডিতে রাইট করা অবস’ায় ভাইরাস পাওয়া গেলেও তা মুছা অসম্ভব।
৩। আজকাল মোবাইল ফোনে মেমোরি স্টিক জাতীয় এক্সাটার্নাল মেমোরি যুক্ত করার সুবিধা থাকায় এবং গান, রিংটোন, ইমেজ বা মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টসমূহ কম্পিউটার হতে মোবাইল ফোনে ডাউনলোড এবং মোবাইল ফোন হতে কম্পিউটারে আপলোড করার বিষয়টি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হওয়ায় এসব ক্ষেত্রে কম্পিউটারের সাথে মোবাইলে সংযোগ দেওয়ার সাথে সাথে সেটিকে স্ক্যান করে নেওয়া উচিত।
৪। ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে ছবি পিসিতে আপলোড করার সময় ক্যামেরার মেমোরিকে স্ক্যান করিয়ে নেওয়া।
৫। ডিস্ক রাইট প্রটেক্ট না করে অন্য কোন কম্পিউটারে ব্যবহার না করা।
৬। সব সময় এন্টিভাইরাসের আপডেটেড ভার্সন ব্যবহার করা।
৭। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে অবশ্যই প্রতিদিন এন্টিভাইরাস প্রোগ্রামটি আপডেড করিয়ে নেওয়া।
৮। প্রতিদিন কাজের শেষে প্রয়োজনীয় ডাটার ব্যাকআপ রাখা। ব্যাকআপ রাখার পূর্বে যে স’ানে ব্যাকআপটি নেয়া হচ্ছে সেটি ভাইরাসমুক্ত কিনা তা দেখে নেওয়া।
৯। পিসিতে কোন পেনড্রাইভ / সিডি-ডিভিডি রেখে কম্পিউটার চালু না করা।
১০। অধিকাংশ ভাইরাস সাধারণ .exe ফাইলসমুহে আক্রমণ করে বেশি। তাই .exe ফাইলসমুহ Read Only করে রাখা।
১১। মাঝে মাঝে এন্টিভাইরাস দিয়ে পুরো পিসিকে স্ক্যান করিয়ে নেওয়া।
১২। ইন্টারনেট এবং ল্যান ব্যবহারে সতর্ক হওয়া। ইন্টারনেট এবং ল্যান ব্যবহারের পূর্বে এন্টিভাইরাস এবং ফায়ারওয়াল চালু রাখা।
১৩। ভাইরাস স্ক্যানিং করে ইন্টারনেট থেকে ফাইল ডাউনলোড করা।
১৪। ই-মেইল এ অপরিচিত এটাচমেন্ট ফাইল খোলার ব্যাপারে সর্তক হওয়া।
১৫। ওয়েবে ”টরেন্ট” জাতীয় সাইট হতে ফাইল নামানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা। এ ধরণের সাইটে নানা ধরণের ভাইরাস লুকিয়ে থাকতে পারে।
১৬। অযথা অপ্রয়োজনীয় ফ্রি সফটওয়্যার বা ডেমো সফটওয়্যার ব্যবহার না করা।
১৭। কম্পিউটার র্স্টাটআপে ভাইরাস প্রতিরক্ষক গার্ড একটিভ রাখা।
১৮। পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার না করা। কারণ এজাতীয় সফটওয়্যারগুলোকে একটিভ করার জন্য এদের সাথে কী-জেন জাতীয় প্রোগ্রাম দিয়ে দেওয়া হয়। এগুলোর মধ্যে ভাইরাস থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
১৯। সম্ভব হলে বছরে অন-ত একবার সম্পূর্ণ হার্ডডিস্ট টি ফরম্যাট করে নতুন করে সব প্রোগ্রাম ইন্সটল করা।
২০। পিসিতে অতিরিক্ত গেমস ইনষ্টল না করা।
উপরের নিয়মগুলো মেনে চললে ভাইরাস হতে নিজের পিসিকে অনেকটায় বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।
কৃতজ্ঞতাঃ ফাহাদ
Been using AVG protection for a couple of years, I recommend this solution to everyone.
উত্তরমুছুন